Published by Md Monna
পছন্দের মানুষকে বিয়ে করার জন্য বিশেষ আমল
এখন যেই আমল লিখছি, তা শুধু বিয়ের উদ্দেশ্যেই করা যাবে, এমন না। বরং এই আমলটি যেকোনো প্রয়োজন পূরণের জন্য করলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ তায়ালা।
এই আমলের কয়েকটি শর্ত রয়েছে। শর্তগুলো অবশ্যই সঠিকভাবে পালন করতে হবে।
তা হল,
১: পাচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হবে।
২: মিথ্যা বলা ও হারাম খাদ্য খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩: মানুষকে ধোকা দেওয়া যাবেনা।
৪: সাধ্যমতো গরিবদের দান করতে হবে। এবং সুযোগ হলে মানুষের উপকার করতে হবে।এবং আল্লাহকে খুশি করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন নেক আমল করার চেষ্টা করবে।
৫: বিশেষত যারা পছন্দের মানুষকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে এই আমল করবে, তারা সব ধরনের গুনাহ ছেড়ে তওবা করবে এবং ভবিষ্যতে গুনাহ না করার মন মানসিকতা তৈরি করবে।
৬: আর বিশেষত যাকে ভালবাসেন, তার জন্য, নিজের ও তার পরিবার এবং আগে ও পরের সকল মুসলমানদের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে মাফ চাইবেন। এই ৬ নং শর্তটা দারুন ফলপ্রদ।
উপরের শর্তগুলো ঠিকমতো পালন করতে পারলে, আশা করা যায় যে, আপনার উদ্দেশ্য যত বড়ই হোক না কেন, ইনশাআল্লাহ তায়ালা আপনার উদ্দেশ্য আল্লাহ তায়ালা পূরন করে দিবেন।
অতঃপর যেকোন দিন মাগরিবের নামাজ আদায় করে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে। যার যে প্রয়োজন, সেই উদ্দেশ্য পূরনের নিয়তে নামাজ পড়বে। এবং নামাজ শেষে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে আকুতি মিনতি করে বিনয়ের সহিত নিজের উদ্দেশ্য পূরনের জন্য দোয়া করবে। কেঁদে কেঁদে দোয়া করার চেষ্টা করবে। কারন মহান আল্লাহ তায়ালা কান্না করে দোয়া করলে অনেজ খুশি হোন। আর আল্লাহ তায়ালা খুশি হলে "কেল্লা ফতেহ"। আর কেউ কাঁদতে না পারলে, কান্না করার ভান করবে,, এতেও আল্লাহ তায়ালা খুশি হোন।
অতঃপর দোয়া শেষে পশ্চিম মুখ হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আল্লাহর অফুরন্ত রহমতের উপর ভরসা করে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর্যন্ত মহান আল্লাহ তায়ালার এই নাম খুব ভালবেসে ডাকতে থাকবে। প্রেমিক যেমন তার ভালবাসার মানুষকে আদর করে অনেক আবেগ নিয়ে ডাকে, ঠিক তেমনি আল্লাহ তায়ালাকে মহব্বতের সহিত ডাকতে থাকবেন।
يَا رَبِّ
"ইয়া রব্বি"
অর্থ, হে আমার পালনকর্তা!
আর ডাকার সময় মনে মনে ভাববেন যে, আপনি আল্লাহকে অনেক ভালবাসেন। আর আল্লাহ তায়ালা আপনাকে আরো অনেক বেশি ভালবাসেন। সুতরাং আল্লাহ তায়ালা আপনি যা চাইবেন, তাই খুশি হয়ে দান করবেন।
আমল শেষ করার পর মুনাজাত করবেন। মুনাজাতে ১ বার সুরা ফাতেহার প্রথম আয়াত পড়বেন এবং ১ বার নবিজি সাঃ এর উপর যেকোন একটি দুরুদ শরিফ পড়বেন। অতঃপর নিজের বাসনা পূরনের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করবেন।
এভাবে মাগরিবের পরে লাগাতার ৭ দিন আমল করবেন। এবং ৭ দিন শেষ হওয়ার পর প্রতি বৃহস্পতিবার মাগরিবের পরে ২ রাকাত নফল নামাজ পড়ে একই আমল করবেন। কোন কারণে বৃহস্পতিবারে করতে না পারলে শুক্রবার মাগরিবের পর করে নিবেন।
কখনো মহান আল্লাহ তায়ালার উপর থেকে ভরসা ত্যাগ করবেন না। বিরামহীনভাবে আমল চালাতেই থাকবেন। বিশেষত যারা পছন্দের মানুষকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে আমল করবেন। এভাবে আমল চালাতে থাকলে ইনশাআল্লাহ তায়ালা কয়েকমাসের মধ্যেই বিয়ের ভাল ব্যবস্থা হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ তায়ালা। আল্লাহ চাইলে ১/২ মাসেও হতে পারে। আর না হলে নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। কারণ আমল যত বেশি হবে, আপনার জন্য ততো ভাল।
আর দোয়া করার সময় বিবাহের সাথে সম্পৃক্ত বিষয়েও দোয়া করতে পারেন। অর্থাৎ আপনার ভালবাসার মানুষ যেন আপনাকে অনেক ভালবাসে, আপনাকে ছাড়া অন্য কারো দিকে না তাকায়। বিয়ের পর দাম্পত্যজীবনে যাতে মহান আল্লাহ তায়ালা রহমত ও বরকত দান করেন। আপনার পছন্দের মানুষ যেন, আপনার হক পুরোপুরিভাবে আদায় করে। অভাব - অনটন যাতে না হয়, ইত্যাদি দোয়া করবেন। সুতরাং আমল যত বেশি সময় নিয়ে করবেন এবং দীর্ঘদিন করবেন, আপনার দোয়ার বরকতে ততো বেশি কল্যাণ আল্লাহ পাক দান করবেন ইনশাআল্লাহ তায়ালা।
সুতরাং কাঙ্ক্ষিত ফল লাভ হতে দেরী হলেও হতাশার কোন কারণ নেই। অনেক সময় আল্লাহ তায়ালা বান্দার ভালোর জন্যই দোয়া কবুল করতে দেরি করেন।অতএব আমাদের ধৈর্য ধরে আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা করে আমল চালাতে থাকা উচিৎ। আরর এতে আল্লাহ তায়ালাও অনেক খুশি হন, এর প্রমাণ পবিত্র কোরআনেও আছে।
পবিত্র কোরআনে মহান রব্বুল আ'লামীন বলেন,
يا ايه الذين امنوا استعينوا بالصبر والصلوۃ. ان الله مع الصبرين
সুরা বাকারা। আয়াত ১৫৩.
অর্থাৎ হে মুমিনগন! তোমরা নামাজ ও ধৈর্যধারণের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য চাও। নিশ্চয় ধৈর্যশীলদের সাথে আল্লাহ আছেন।
সুতরাং এতেই প্রমাণ হয় যে, ধৈর্যধারণ করলে কত বেশি সুফল পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ তায়ালা।
আপনারা যাতে ভাল ফলাফল লাভ করতে পারেন, এজন্যইই এতো দীর্ঘ আলোচনা করলাম। প্রথমে ধারাবাহিক ৪১ দিনের আমল দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম, কিন্তু অনেকের জন্য তা কষ্টকর হয়ে যেতে পারে, তাই ৭ দিনের আমল দিলাম।
এই আমল পাকিস্তনের দুইজন ভাল উস্তাদ থেকে পেয়েছি, আর আমিও কয়েকটি প্রয়োজন পূরনের উদ্দেশ্যে এর উপর আমল করে মহান আল্লাহ তায়ালার রহমতে ধারনার চেয়েও বেশি সুফল লাভ করেছি।
তো আপনার সবাইকে এই আমল গিফট হিসেবে পোস্ট করলাম। ইনশাআল্লাহ তায়ালা এর উপর আমল করলে কেউ নিরাশ হবে না।
যারা করবেন, তারা কমেন্ট করে অনুমতি নিয়ে নিবেন। দরকার হলে ইনবক্স করবেন।
মহান আল্লাহ তায়ালা সবাইকে সফলতা দান করুন। আমিন।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সব ধরনের যাদু-টোনা ও বান কাটার সহজ আমল

ফাজায়েলে আমাল নিয়ে এত বিভ্রান্তি কেন

জুলকারনাইন