কে এই জকির
মধু তো মধুই ছিলো, এখন খাঠি লাগান কেন?
সাবান তো সাবানই আছে, এখন হালাল কেন?
শিয়া, রাফেজী, খারেজী_আহলে হাদীস নামে বাতিল ফিরকা বানান কেন? সেই কারণেই আমরা রাসুল সা· এর নির্দেশ মতে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত মুসলমান ৷ সেটা হতে হলে ইজমায়ে উম্মাত মতে মাযহাবের অনুসারী হতে হবে৷ এটিকে পাশ কাটিয়ে বর্তমানে আর কেউ হকপন্থী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই ৷
সুতরাং যারা মাযহাব বহির্ভুত তারা আহলে সুন্নাত পরিপন্থী ৷ আর যারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত বহির্ভুত তারা বাতিল গোমরাহ মিনাদ্দাল্লীন ৷
আজকে কথিত আহলে হাদীসরা মুসলমানদের ধোকা দেওয়ার জন্য বলে আমরা আহলে সুন্নাতও না, হানফীও না, আহলে হাদীসও না ৷ বরং আমরা মুসলমান ৷
নিজেদের মুসলমানের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত বোঝানোর জন্যই এই বাক্য ৷ অথচ তারা যেভাবে অন্য মুসলমানকে কাফির মুশরিক বলে আহলে সুন্নাতের কেউ তাদের অমুসলিম বলে না ৷ বরং মতভেদ সৃষ্টিকারী বিধর্মীদের সৃষ্ট ও লালিত ভ্রান্ত দল ও গোমরাহ ফেরকা বলে ৷ যাকে এক কথায় মোনাফিক এবং ফাসিক বলা যায় ৷ সুতরাং নিজেদের মুসলমান জাহির করার অর্থ হলো তারা নিজেদের ইসলাম সম্পর্কেই সন্দিহান ৷
মুসলমান শব্দের পূর্বে আহলে সুন্নাত ও মাযহাবের পরিচয় দেওয়ার কারণ হল সব বাতিল ফেরকা নিজেদের মুসলমান পরিচয় দেয় ৷ তাই কে কোন ধরণের মুসলমান সেটার পরিচয় বহনকারী শব্দ ব্যবহার আবশ্যক ৷ কিন্তু কথিত আহলে হাদীসদের আমরা মুসলমান পরিচয়ের মাধ্যমে শিয়া খারেজীদেরকেও মুসলমানের অন্তর্ভুক্ত করার ষড়যন্ত্র নিহিত রয়েছে ৷
তারা সাহাবীদের কথা দলীল নয় বলার উদ্দেশ্যসমুহে এটিও একটি যে রাসুল সা এর যুগে শিয়া খারেজী গোমরাহ ফেরকা বের হয়নি ৷ তাই তাদের ব্যপারে ভবিষ্যদ্বানী থাকলেও সরাসরি বাতিল গোমরাহ বলার সুযোগ রাসুল সা· পাননি ৷ এসব দল বের হয়েছে সাহাবায়ে কেরামের যুগে ৷ সাহাবায়ে কেরাম তাদের গোমরাহ বলেছেন ৷ কথিত আহলে হাদীসদের কথা হল সাহাবায়ে কেরামের কথা দলীল নয় ৷ তাই তাদের কথায় শিয়া খারেজীরা বাতিল বলে সাব্যস্ত হবে না ৷
এরপরে যেসব বাতিল দল সৃষ্টি হয়েছে তাদেরকে বাতিল বলেছেন তাবেইন তবে তাবেইন সলফে সালেহীন এবং প্রত্যেক যুগের ফকীহ মুহাদ্দিস উলামায়ে কেরাম৷ এই শৃংখল ভাঙ্গার জন্য কথিত আহলে হাদীসরা বলে থাকে ইজমা বা আলেমদের কথা কি শরীয়তের দলীল? যাতে মুসলমানগণ উলমায়ে কেরামের দেওয়া গোমরাহের ফতওয়া না মানে ৷
এভাবেই তারা নিজেদের এবং বিধর্মীদের সৃষ্ট অন্যান্য বাতিল দলকে হক দলে পরিনত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত ৷
অথচ কথিত আহলে হাদীসরা যে উলুমুল হাদীস তথা হাদীস বর্ণনাকারী যাচাই বাছাইয়ের শাস্ত্রটিকে ধর্ম পালনের মুল বিধান বানিয়ে সহীহ হাদীস আর জয়ীফ হাদীস পার্থক্য করেন সেই শাস্ত্রটি মুজতাহিদ এবং মুহাদ্দিসগণ বানিয়েছেন কথিত আহলে হাদীস, শিয়া, রাফেজী ও খারেজী ইত্যাদী বাতিল দলগুলোর বানানো হাদীস যেন হাদীস নামে সংকলিত না হয় ৷ একই উদ্দেশ্যে একই ব্যক্তিগণ উলুমুল ফিকহ নামে শাস্ত্র বানিয়েছেন ৷ যাতে ইসলামে শিয়া খারেজী ও কথিত আহলে হাদীসদের ন্যয় বাতিল ফেরকাগুলোর অপব্যখ্যা ইসলামে স্থান করে না নেয় ৷
একই ব্যক্তিদের বানানো দুইটি শাস্ত্র ৷ যা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মেনেছেন ৷ কথিত আহলে হাদীসগণ এই দুইটির মধ্যে পার্থক্য করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করে থাকেন ৷ তারা সেখানেই বিভেদ সৃষ্টি করার মাধ্যমে ইসলাম রক্ষার মূল প্রাচীরেই আঘাত করতে চান ৷ তাদের মতে উলুমুল হাদীস মানলে সে প্রকৃত মুসলমান উলুমুল ফিকহ মানলে সেই মুশরিক ৷ তাহলে বলুন তো বাপ তো একটাই ৷ যারা উলুমুল হাদীস বানিয়েছে মুলত তারাই উলুমুল ফিকহ বানিয়েছে ৷ যদিও একেক জনের ক্ষেত্রে শর্ত ও ধারা ইত্যাদিতে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে ৷ তা হলে একই বাপকে কিছুক্ষণ মুসলমান আবার কিছুক্ষণ মুশরিক বলার অর্থ কি হতে পারে?
এসবের একমাত্র উদ্দেশ্য হল ইসলামের সর্ব বিষয়ে মুসলমানগণ সন্দিহান হয়ে পড়ুক ৷ পরস্পরের প্রতি আস্থা ও বিশ্বস্ততা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাক ৷
পূর্বপুরুষদের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস যাদের থাকবেনা উত্তরসূরীদের প্রতি তাদের আস্থা ও বিশ্বাস জন্মানোর তো কথাই নেই ৷ এটিই ইসলাম বিরোধী শক্তির একমাত্র লক্ষ ৷ ইসলাম যেহেতু আস্থাশীলতার উপর নির্ভর সেই আস্থা ও বিশ্বাসের মুলে আঘাত হানতে পারলেই হল ৷ ইসলাম বিরোধী শক্তির দীর্ঘ পরিকল্পনাটিই বাস্তবায়ন করছে কথিত আহলে হাদীসরা কোরআন হাদীসের নাম দিয়ে ৷
কোরআন হাদীস যাদের হাত দিয়ে বর্তমান প্রজন্ম পর্যন্ত পৌঁছেছে তারা যদি বিশ্বাষযোগ্য না হয় তারা যদি অনুসরণীয় না হয় তাহলে কোরআন হাদীসের উপর মানুষ কতটুকু আস্থাশীল হতে পারবে?
কোনো মতে যে কোনো কৌশলে মুসলমানদের এরূপ একটি অবস্থানে ঠেলে দিতে পারলেই দেখবেন কথিত আহলে হাদীসদের আর পাওয়া যাবে না ৷ এদের দায়িত্য ও চাকরি এটুকুর জন্যই ৷
এই কারণেই দেখবেন সাহাবায়ে কেরাম থেকে আরম্ভ করে সমস্ত সলফে সালেহীনসহ বর্তমান ইসলামের সকল কর্ণধার মোট কথা তাদের দলভুক্ত ব্যতীত কেউ তাদের সমালোচনা থেকে বাঁচতে পারেনি এবং পারবে না ৷ দুনিয়ায় গুটি কয়েক কথিত আহলে হাদীস ছাড়া যেন কেউ মুসলমান নয় ৷ তাদের সমস্ত লিটারেচার পড়েন মুসলমানদের যত সমালোচনা সেখানে পাবেন তার তোলনায় কোনো ইহুদী খৃষ্টানের ২% সমালোচনাও পাবেন না ৷
বড় আশ্চার্য হবেন এরা সারা দুনিয়ার সমস্ত মুসলমানকে মুশরিক আর কাফির ফতওয়া দেয় আবার অন্যদিকে নাকি বিধর্মীদের মুসলমান বানায় ৷ তাদের কথা অনুযায়ী হাজার বছরের চেষ্টা সাধনা ও কোরআন হাদীসে গবেষণা করে কেউ মুযলমান হতে পারল না কিন্তু জাকির নায়েকের একদিনের সুহবতেই শত শত মুসলমান হয়ে গেল!
ইমাম আবু হানীফা ইমাম শাফেয়ী ইমাম মালেক ইমাম আহমদ রহ· সহ হাজার বছর ধরে তাদের অনুসারী আলেম নন আলেম কেউ তাদের ভাষ্য মতে প্রকৃত মুসলমান নন ৷ কিন্তু যে জাকির নায়েক শুদ্ধ ইচ্চারণে কালমায়ে তাইয়িবা কালমায়ে শাহাদাতটাও পাঠ করতে পারেন না তার টিভি প্রুগ্রামে বসলেই নাকি শত শত কাফির মুসলমান হয়ে যায় ৷ তারা প্রকৃত মুসলমান হওয়ারও খেতাব পায় ৷ আরো বলা হয় জাকের নায়েক এত জনতে মুসলমান বানিয়েছে আপনারা কয় জনকে বানিয়েছেন? মনে হবে এই কথিত আহলে হাদীসের বাপদাদা চৌদ্দগোষ্ঠীর মধ্যে কেউ মুসলমান ছিল না ৷ কারণ তখন তো জাকির নায়েক ছিল না ৷
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন