শায়খ পূজা ছাড়ুন প্রকৃত ইসলাম গ্রহণ করুন
কিছু কিছু লোক এখন শায়খ পূজার মাত্রা এতই বাড়িয়ে
দিয়েছে যে তাদের এখন রাসুল, সাহাবি, তাবেঈ,
সলফে সালেহীন এমনকি কোরআন হাদিসও দরকার
হয়না। একটা টিভি হলেই চেলে। কাদিয়নীরা যেমন
মসজিদে মসজিদে ডিশ লাগিয়ে রাখে আর তাদের
গুরু লণ্ডন থেকে ওয়াজ করলে সেগুলো শুধু
শুনে। তথাকথিত আহলে হাদীসের নামধারী শায়খরা
এখন সেপর্যায়ে পড়েগেছে। হুবহু কাদিয়ানী
গুরুর ন্যায় এক দিক থেকে মতি মাদানী আরেক দিক
থেকে জাকির নিয়েক লেকচার মারে আর তাদের
পূজারিরা ঘরে বসে ওই লেকচার এমনভাবে ফলাও
করে যেন দুনিয়াতে ইসলাম প্রচারে একমাত্র
তাদেরকেই নির্বাচিত ও মনোনিত করে পাঠানো
হয়েছে। তাদের ব্যাপারে কিছু বলা হলে
এমনভাবে চটে উঠে নাস্তিকরা আল্লাহ রাসূলের
প্রতি কটাক্ষ করলেও তারা সেরূপ গরম হতে দেখা
যায়না।
এর চাইতে শায়খ পূজা আর কি হতে পারে?
দাবি করা হয় তাদেরটাই আসল ইসলাম। ইসলাম শুধু জাকির
আর কথিত মাদানি মিয়ার হাতেই যদি সীমাবদ্ধ হয়ে যায়
তাহলে দেড় হাজার বছর ধরে এত ইমাম মুহাদ্দিসরা কি
করেছিলেন?
জাকির আর মাদানিরাই নাকি বলে মাজহাব দরকার নেই।
সাহাবির কথা দরকার নেই। শুধু রাসুল সা এর হাদিস দরকার।
অথচ সাহাবি বাদ দিলে রাসুল সা কে পাওয়া যাবে না।
তাবেঈন বাদ দিলে সাহাবী পর্যন্ত পৌছা যাবে না।
উভয়টি বাদ দিলে প্রকৃত ইসালাম আমাদের পর্যন্ত
পৌছার কোনো সুযোগ নেই।
এই জাকির নায়েক দেড় হাজার বছর পুরোটা বাদ
দিয়ে কিভাবে প্রকৃত ইসলামের দাওয়াত দেয় আবার
কিছু লোক তাদের অনুসারিও হয় কোনো মতে
বুঝে আসে না। জাকিরের হাতে নাকি মানুষ মুসলমানও
হয়। সেটা কোন ইসলামে মুসলমান হয় তাও বুঝা
মুশকিল।
পুর্ব অভিজ্ঞতায় দেখাগেছে অনেক ইসলাম
আছে লণ্ডন ভিত্তিক। অনেক আছে ইসরাইল
ভিত্তিক ইসলাম। প্রত্যেক ইসলামেই কোরআন
হাদীসের বাণী আছে। আছে সুন্দর সুন্দর
চিত্তাতর্ষক স্লোগানও। তবে থাকেনা শুধু সাহাবী
আর তাবেঈ। থাকেনা দেড় হাজার কছরের
শক্তিশালী ধারবাহিকতা।
আজ একই অবস্থা জাকির ও মতির প্রকৃত ইসলামেরও।
এখানে দেড় হাজার বছরের ধারাবাহিতা নেই। এই
ধারাবাহিকতাকে আড়াল করার জন্যই তারা বলে মাজহাব
মানা শিরক। সাহাবীর কথা আর কাজ দলীল নয়। এমনকি
রাসুল সা এর ব্যক্তিগত কথাও শরীয়তের দলীল
নয়। নাউজু বিল্লাহ।
শুধু এই বক্তব্য থেকেই তো একজন মুসলমান
সে যদি প্রকৃত কালেমা পড়ে থাকে বুঝতে পারে
এটি শিয়া খারেজী আর কাদিয়ানীর ইসলাম। এই ইসলাম
রাসূল সা আনীত ইসলাম নয়। এটিই হলো নিজ হাতে
বানানো একেবারে খাটি মধু।
হে মুসলমান, চিন্তা করুন এদের নিজের ইচ্ছাপুষ্ট
ইসলামের জন্য রাসুল সা নিজে রক্ত কোরবান
করেননি। এত অকল্পনীয় ত্যাগ বিসর্জন দেননি।
ইসলাম দেড় হাজার বছরের ধারাবাহিক ত্যাগের নাম।
দেড় হাজার বছরের ধারাবাহিক কোটি কোটি
অবিস্মরনীয় লোকের ত্যাগ তিতীক্ষার সঠিক
মূল্যায়নের নাম।
কোরআন হাদিস হাতে নিয়ে কোন ইহুদী খৃস্টান
বলে এই দেখেন কোরআন হদিস। এর বাইরে
যাওয়া যাবে না। এগুলোই আমাদের মুলমন্ত্র।
কোরআন হাদিস থাকতে সাহাবী উমরের কথা কেন
মানব? আবু হানিফা ও মালিকের কথা মত কেন আমল
করব। আলেমের কথা মানার যৌক্তিকতা কি? পীর
কেন ধরব? ইত্যাদি। এসব কথার সাথে প্রকৃত
ইসলামের কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না। বরং
প্রকৃত ইসলামের কথা হলো তুমি ইসলাম মানতে চাও?
তবে সাহাবায়ে কেরাম যেভাবে রাসুল সা কে
মেনেছেন, আমল করেছেন সেভাকে আমল
করো সেভাবে রাসুল সা কে মানো। যে
আমলের সাথে সলফে সালেহীনের মধ্যস্ততায়
রাসুল সা পর্যন্ত শক্তিশালী ধারাবাহিকতা আছে সে
ইসলামকে মজবুত করে আকড়ে থাকো। এমন
কথাও আছে, শেষ যুগে অনেক প্রকার ইসলাম
দেখবে, শুধু হাদিস কোরআন ছাড়া কিছু নেই এমন
ইসলামও তোমরা দেখতে পাবে। এমন কথাও
তাদের মুখে শুনতে পাবে যা তোমরা আগে
শুননি। এদের চিত্তাকর্ষক কথায় তোমরা নিজেদের
বিলিয়ে দিওনা। বরং তখনও তোমরা আমি এবং আমার
সাহাবির সুন্নাতের উপর অটল থাকবে। ধারাবাহিক যে
বড় দল থাকবে ওই দলের সাথেই থাকবে।
বেশিরভাগ আলেম উলামা যে পথে থাকবে সে
পথই আকড়ে থাকবে।
এটি হলো রসুল সা এর প্রকৃত ইসলামের মৌলিক
দিকনির্দেশনা। এভাবে থাকলেই বলা যাবে সে
প্রকৃত ও হক পথে আছে। এর বেতিক্রম
দেখলেই বুঝতে পারবেন এটি নিশ্চয় লণ্ডন
ভিত্তিক বা ইসরাইল ভিত্তি কথিত প্রকৃত ইসলাম।
ইসলামের শুরু লগ্ন থেকে যেসব বাতিল ফিরকা ছিল
সবই সাহাবী বিদ্বেষী ছিল। তা থেকে একটা মৌলিক
পরিচিতি সৃষ্টি হয়েছে যে, যাদের মধ্যেই সামান্য
সাহাবী বিদ্বেষ পাওয়া যাবে বা সাহাবি বিরোধী
আমল পাওয়া যাবে তারা নিশ্চিত এবং নিঃসন্দেহে হয়
গোমরাহ, বাতিল না হয় সরাসরি কাফির ইসলাম
বিদ্বেষীই হবে।
এখন গভীরভাবে চিন্তা করে দেখুন কথিত
আহলে হাদীস জাকির আর মতি মাদানীরা কোন
খাতে পড়ে।
এরা কি আসলে ইসলামের খেদমতগার? না কি ইহুদি
খৃষ্টানের বংশ থেকে এসেছে গোলাম আহমদ
কাদিয়ানী হয়েছে? জাকির নায়েক হয়েছে।মতি
মাদানী সেজেছে।
আমাদের থিউরিটা বলে দিয়েছি। এখন কাদিয়নী নাকি
ইহুদী সেটা যাচায় করা আপনাদের দায়িত্ব।
যুগ যুগ ধরে উলামায়ে কেরাম বাতিল সম্প্রদায়গুলো
সম্পর্কে মুসলমানদের মাঝে ধারণা দিয়ে
এসেছে। প্রথম প্রথম অনেক মুসলমনে এসব
ধারণা থেকে সঠিকভাবে উপকৃত হতে চায় না।
অনেক সময় আলেমদের মানুষ গালি দিয়েছে।
কিন্তু রাসুল সা এর গালি খাওয়ার সুন্নাতের দিকে
তাকিয়ে বাতিলদের বিষয়ে উলামায়েকেরাম
আপোষ করেনি।
তথাকথিত আহলে হাদিস , জাকের নায়েক , মতি মাদানিরা
নিকৃষ্ট বাতিল হিসেবে প্রমানিত হওয়ার পর কোনো
আলেম ইনশাআল্লাহ আপোষ করবে না।
ঐক্যের নামেও এরা অনেক প্রকার চাল চাতুর্যতার
আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করে থাকে।
এ ব্যাপারে কথা হলো যখন হক আর বাতিল দ্বন্ধ হয়
তখন ঐক্য মৌলিক বিষয় থাকে না। বরং ইসলামী
আমলগুলোকে বাতিল মুক্ত করা এবং গোমরাহ দল
থেকে মুসলমানদের রক্ষা করাই উলামায়ে
কেরামের অনিবার্য দায়িত্ব হয়ে পড়ে।
অনেকে মনে করে সারা দেশতো তথাকিথিত
আহলে হাদিসরা খেয়ে ফেলছে। সব মানুষ
গেমরাহ হয়ে যাচ্ছে। আসলে ভাই ও বোনেরা
মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, অগণিত অসংখ্য ত্যাগ আর
প্রাণ বিসর্জনের মাধ্যমে যে মহান ইসলাম দুনিয়া
ব্যাপী ছড়িয়ে আছে দু একজন ভাড়াটিয়া যুবককে
টাকা দিয়ে মসজিদে মসজিদে আমীন জোরে
বলার ব্যবস্থা করলে, সৌদী রিয়াল খরচ করে টিভি ,
ফেইসবুকে একচেটিয়ে দখলে নওেয়ার চেষ্টা
করেই কি প্রকৃত ইসলাম থেকে মুসলমানদের
বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে? এটি হতে পারে না। ইসলাম
হেফাজতের দায়িত্ব আল্লাহ তাআলা নিজ হাতে
নিয়েছেন তেমনি বান্দাদের মধ্যে প্রকৃত ইসলাম
চর্চা হওয়ার দায়িত্বও তার হাতে।
সুতরাংএসব কথিতদের দৌরাত্ম দেখে প্রভাবিত হওয়ার
কোনো কারণ নেই।
প্রিয় বন্ধুগণ! আপনারা হয়ত দেখে থাকবেন সারা
দুনিয়ায় তথাকথিত আহলে হাদিসরা মিড়িয়াকে কাজে
লাগিয়ে তাদের বাতিল চিন্তাধারা প্রচার ও প্রতিষ্ঠার যে
ফিরআউনি জাল বিছানোর চেষ্টা অপচেষ্টা চালাচ্ছে
তাতে দুনিয়ার সকল মুসলমান তথাকথিত আহলে হাদিস
দলে ভর্তি হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবতা শূন্যের
কোটায়।
কোনো ভাল ও হক্কানী মুসলমান তাদের এ শিয়া
কাদিয়নী সুলভ ইসলাম গ্রহণ করেনি।
পুরো সৌদী আরব যেখানকার প্রভাব দেখিয়ে তারা
পুরো দুনিয়ায় প্রতারণার জাল বিস্তারের অপপ্রয়াস
চালাচ্ছে তাতে শতকারা ৮ভাগ মুসলমানও তথাকথিত
আহলে হাদিস নয়। সম্প্রতি তাদের কার্যক্রম শিয়া
কাদিয়ানী এবং খারেজী সম্প্রদায়ের সাথে মিলে
যাওয়ায় তাদের করতরাজ্য সৌদি আরব থেকেও তারা
প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে।
বাংলাদেশের কথা বলি, এদেশেও কোনো
হক্কানি মুসলমান তথাকথিত আহলে হাদিস নেই। কিছু
আছে বংশগত। একেবারে মুর্খ হলেও সে
আহলে হদেস! আবার অনেক বিকৃত মস্তিষ্ক
দুদোল্যমান মওদুদীজিামাতের লোক ঐ দলকে
বেছে নিয়েছে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে।
তাও স্থায়ী কি না সন্দেহ। আর কিছু যুবশ্রেণী
আছে, যাদেরকে টাকা দিয়ে, সাইকেল দিয়ে,
অনেককে মোটর সাইকেল দিয়ে সময় ভাগাভাগী
করে মসজিদে মসজিদে পাঠানো হয় জোরে
আমীন বলে অন্যের নামায নষ্ট করার জন্য। আর
শায়খ গণ ঐ গুলো ভিডিও করে তাদের আরবী
ভাইগণ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।
বাংলাদেশী শায়খ গণের ইলম এবং তাদের
প্রতারণামূলক কাজের বাস্তব অবস্থা যদি আরবের
লোকেরা জানত তাহলে হয়ত তাদের চুরি প্রতারণার
সাজাই দিত।
এই হলো এত ডাক ঢোল পেটানোর পরও তাদে
শূন্য অর্জন।
আচ্ছা দেখুন তো তাদের দাবি হলো তারা যা বলে
এবং করে সবকিছু নাকি কোরআন হাদিসের
দলীলের ভিত্তিতেই করে। এটিই তাদের
প্রতারণার চূড়ান্ত হাতিয়ার। কিন্তু কওমী মাদরাসার
কোনো ছাত্রও যদি তাদের বলে, আপনারা তো
কোরআন হাদীসের বাইরে কিছু করেন না,
কোরআন হাদীসের দোহায় দিয়ে আপনারা বেশ
কিছু ইবাদতে এদেশের মুসলমানদেরকে বিভক্ত
করতে চান, তাহলে আসুন মিলিয়ে দেখি আপনাদের
কোরআন হাদীসের দলীল মজবুত নাকি আমাদের
দলীল মজবুত। আসুন আলোচনা করে একটা
সমাধানে যাই। একথা শুনতেই যেভাবে তাদের
পালানো আরম্ভ হয় তা দেখেই তো মুসলমান যারা
তাদের প্রতারণার শিকার হয়ে তাদের দলভুক্ত
হয়েছে তারা তাওবা করে ফেলে আর তাদের
ঈমান নবায়ন করতে সচেষ্ট হয়।
একারণে ওসব লাল শালু শায়খরা বক্তব্য দেওয়ার
ক্ষেত্রে এমন নিরাপদ স্থান খোজে যাতে
জনরোষের সামনে না পড়তে হয়।
তাই দেখবেন ওই শায়খ গণ সবসময় টিভির পর্দায়,
ফেইস বুকে, নিজস্ব মিডিয়ায় লেকচার দিতে থাকে।
অনেকে মনে করে এই লোক মিডিয়ায় বক্তব্য
দিচ্ছে না জানি কতবড় ইলমের সাগর! না জানি কতবড়
ইসলামিক স্কলার। কেউ ভাবে না এটি তাদের
ক্রেডিট নয়, বরং ভীষণ দূর্বলতা ও কাপুরুষতা।
তাবলীগ জামাতের তিন দিন দেওয়া লোক
জনসম্মুখে যে অবদান রাখতে পারে মাদানী
ইউনিভার্সিটি থেকে প্রতারণার সনদ পাওয়া সে শায়খ
ঐ অবদান রাখারও যোগ্য নয় বলে মিডিয়ায় হারামের
মধ্যে বসে বসে ইসলামকে কলঙ্কিত করার
শ্রেষ্ঠ কু অবদান রাখছে।
হারাম দ্বারা ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চাওয়া আর বাথরুমে
বসে নামাজ পড়া সমান।
এদের যাবতীয় অবদান এ মানেরই। তাতে
কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।
আল্লাহ আমাদেরকে ইসলাম বিরোধী সবধরণের
প্রতারণা সম্পর্কে অবহিত হওয়ার এবং তা থেকে
বাচার তাওফীক দান করুন। আমীন
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন